ঘুমপাড়ানি গান এক ধরণের সঙ্গীত যা শিশুদেরকে দ্রুত ঘুমপাড়ানোর উদ্দেশ্যে গেয়ে শোনানো হয়। দুনিয়ার সব মায়েরাই শিশুদের ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে থাকেন। ভাষা ভিন্ন হলেও এসব গানের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। সুপ্রাচীনকাল থেকে বিশ্বের সকল দেশের সংস্কৃতিতেই ঘুমপাড়ানি গানের দেখা পাওয়া যায়।
ঘুমপাড়ানি গানের ইতিহাস
গবেষকদের মতে, বিশ্বের প্রথম ঘুমপাড়ানি গানটি লেখা হয়েছিল অন্তত চার হাজার বছর আগে। প্রাচীন ব্যাবিলনের (বর্তমান ইরাক অঞ্চল) অজ্ঞাত এক গীতিকার এ ধরণের গান রচনা করেছিলেন। লন্ডনে অবস্থিত ব্রিটিশ মিউজিয়ামে প্রাচীনতম ওই ঘুমপাড়ানি গান লেখার প্রাচীন ফলকটি সংরক্ষিত আছে। সেখানকার বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ডামব্রিল বলেন, প্রাচীন ঘুমপাড়ানি গানে ভীতিকর বিষয়বস্তুর প্রাধান্য ছিল। এসব গানে শিশুকে বলা হতো, সে অনেক শোরগোল করেছে, তাই ভয়ঙ্কর দৈত্য জেগে উঠেছে।

ঘুমপাড়ানি গানের গুণাগুন
ঘুমপাড়ানি গানের স্বাস্থ্যহিতকারী গুণ রয়েছে। আর স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা আবার মা-মাসিদের ঘুমপাড়ানি গান গেয়ে বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানোর চেষ্টার পক্ষে যুক্তি খুঁজে পেয়েছেন।
বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে ঘুমপাড়ানি গান
- বাংলাদেশ: ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি মোদের বাড়ি এসো কিংবা খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো প্রভৃতি গান।
- ভারত: ঘুমপাড়ানি গানে ‘চাঁদ মামাকে’ ডাকা হয়।
- কেনিয়া: হায়েনার ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানো হয় শিশুদের।
- যুক্তরাজ্য: দোলনায় রেখে বিশেষ গানের তালে তালে শিশুদের ঘুম পাড়ান মায়েরা। জনপ্রিয় ঘুমপাড়ানি গানে শিশুকে ভয় দেখানো হয়, গাছের শাখা থেকে তার দোলনাটি পড়ে যাবে বলে।
- ইরাক: ঘুমপাড়ানি গানে রয়েছে মরুভূমির বিষণ্ন সুর। হারানো স্বজনদের স্মরণে সেই গান গাওয়া হয়।
- সুইডেন: প্রচলিত ঘুমপাড়ানি গান শিশুদের ভাষা শেখার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
Image Credit: Pixaby