সব বাসায়ই অনেক কাজ থাকে। ঘর পরিস্কার, রান্না, কাপড় ধোয়া এমন বহু কিছু। এসব গ্রাহ্য হয় ‘গার্হস্থ্য শ্রম’ হিসেবে। সাধারণত বাড়ির নারী ও কাজের মানুষরা তা নিয়ে সারা দিন ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু এগুলো তো পরিবারের জন্য খুবই দরকারি কাজ। প্রশ্ন তাই, শুধু নারীদের ওপর তা চাপিয়ে দেয়া হবে কেন? পরিবারের এসব গার্হস্থ্য কাজে এ জন্য সবার অংশ গ্রহণ জরুরি। বিশেষত ঘরের সব চেয়ে কনিষ্ঠ সদস্য শিশুকে তাতে উৎসাহিত করতে হবে। শিশুর সুস্থ বিকাশ, শারীরিক ও মানসিক সক্রিয়তায় তা ভূমিকা রাখতে পারে।

এই সময়ের শিশুরা আগের প্রজন্মের চেয়ে অনেক কারণে আলাদা। সব প্রজন্মই মূলত ভিন্ন। সময়ের ভিন্নতায় এ বদল। আজকের শহুরে শিশু হারিয়েছে প্রকৃতি। দিনের একটা বড় সময় তাদের কাটে ডিভাইস হাতড়ে। আছে স্কুলের পড়া, প্রাইভেট টিউটরের প্রবল চাপ। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে। এই বাস্তবতায় ঘরের শিশুকে গার্হস্থ্য কাজে সাধ্য মতো নিয়োজিত করার সুফল অনেক।
অল্প বয়সে নিজের দায়িত্ব জানা থাকা শিশু বড় হয়ে কর্ম নিষ্ঠ হবে। তার মধ্যে কম থাকবে পর নির্ভরতা। ছোট বেলা থেকে তাকে ঘরের কাজে যুক্ততা হবে একটি ইতিবাচক কাজ।
একটি সংসারে অনেক ধরণের কাজ থাকে। সকাল থেকেই শুরু হয় তা। নাস্তা তৈরি, ঘর পরিস্কার, গাছে পানি দেয়া, কাপড় ধোয়া, কাপড় ইস্ত্রি এমন কাজের তালিকা দীর্ঘ। অভিভাবকরা এ সব কাজে সন্তানকে যুক্ত করলে কোনো ক্ষতি নেই। এখন প্রায় সব মধ্যবিত্ত পরিবারেই থাকে কাজের মানুষ। সব কাজের দায় বর্তায় তার ওপর। তার ওপর সব কিছু নির্ভর করে। সব চাপ সব দায় যেন তার। শিশু সহ পরিবারের সব সদস্যকে গার্হস্থ্য কাজে সক্রিয় করলে এর বদল ঘটবে।

শিশু ঘরের কাজে অংশ নিলে তার আত্ম বিশ্বাস বাড়বে। নিজেকে ছোট নয় বরং পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য যে সে নিজে এটি তার মধ্যে প্রথিত হবে। শ্রমের প্রতি তার শ্রদ্ধা বাড়বে। ডিভাইস নির্ভরতা একটু হলেও কমবে। পড়ার চাপ থেকে ভিন্ন কিছু করার বিশ্রাম পেয়ে সে প্রশান্ত হবে। ভবিষ্যতের জীবনেও এ সব শিক্ষা কাজে লাগবে। আজকের শিশু প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে আত্ম বিশ্বাসী মানুষে পরিণত হবে। সব বিবেচনায় মা, বাবার জন্য তাই ‘গুড প্যারেন্টিং’ এর একটি সুন্দর নজির হবে সন্তানকে গার্হস্থ্য কাজে নিয়োজিত করা। সুফলের শেষ নেই যার।